ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বর হলো আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি রোগের নাম। সাধারণত বছরের যখন জুন মাস এবং জুলাই মাস আসে। তখন এই ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব অনেক বেড়ে যায়। আর যখন কোন একজন ব্যক্তি এই ডেঙ্গু জ্বরের মধ্যে আক্রান্ত হয়। তখন সেই ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমপক্ষে ১০২ ডিগ্রী থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এত বেশি জ্বর হওয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হয়ম সেই সাথে বমি বমি ভাব, পেটের মধ্যে ব্যথা। খাবারের অরুচি, কোষ্ঠকাঠিন্য সহো খাবারের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়। আর যদি আপনার পরিচিত কেউ এই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাহলে আপনাকে তাৎক্ষণিক ভাবে সেই ব্যক্তির চিকিৎসা নিতে হবে। অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে।
তবে আপনার পরিবার কিংবা আপনার আশেপাশে কেউ যদি ডেঙ্গু জ্বরের মধ্যে আক্রান্ত হয়। তাহলে আপনি নিজে থেকেই ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা নিতে পারবেন। মূলত এ গুলো হলো প্রাথমিক চিকিৎসা। আর এভাবে একটি রোগী কে অনেকটা সুস্থ করা সম্ভব। তবে এই প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ ডাক্তার এর শরণাপন্ন হতে হবে। তো আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আমি আপনাকে ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। যাতে করে আপনি একজন ডেঙ্গুর রোগী কে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন।
জ্বর কমানোর চেষ্টা করতে হবে
সচারচর কোন একজন ব্যক্তি যখন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়। তখন তার শরীরে প্রচুর পরিমাণে জ্বরের প্রভাব দেখা যায়। আর সে কারণে প্রথমেই আপনাকে সেই রোগীর জ্বরের তাপমাত্রা অনেকটাই কমিয়ে আনতে হবে। সেজন্য আপনি প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন। এবং এই ওষুধ গুলো আপনি সেই রোগী কে প্রতি 8 থেকে 9 ঘণ্টা পর করে সেবন করাতে পারবেন। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন যাতে করে অতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধ সেবন করা না হয়। এতে করে সেই রোগীর ভিতরে লিভারের সমস্যা দেখা দিবে। এর পাশাপাশি আপনি সেই রোগীর মাথায় পানি ঢালা, শরীর মুছে দেওয়া এবং গোসল করে দেওয়ার কাজ টি করতে পারবেন।
নিয়মিত পানি পান করান
একটা কথা মাথায় রাখবেন, যখন কোন একজন ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবে। তখন তাকে নিয়মিত পানি পান করাতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি দৈনিক সেই ব্যক্তি কে তিন লিটার পর্যন্ত পানি পান করানোর চেষ্টা করবেন। তবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি পানি পান করতে না চায়। তাহলে আপনি ফলের শরবত, ভাতের মার, দুধ, ডাবের পানি সহ ওরস্যালাইন খাওয়া তে পারবেন। এতে করে সেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী অনেকটাই সুস্থতা বোধ করবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করবেন
যখন একজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ডেঙ্গু রোগের প্রদুর্ভাব দেখা যাবে। তখন সেই রোগী কে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর একজন ব্যক্তির শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। আর যখন আপনি বুঝতে পারবেন যে। আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তির ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তখন আপনি সেই ব্যক্তি কে কমপক্ষে 8 থেকে 10 দিন পর্যন্ত বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন সেই রোগী যদি মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম করে। তাহলে তার ডেঙ্গু জ্বরের পরিমাণ আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। তবে একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক যে হাঁটাচলা করার প্রয়োজন হয় সেটা সে করতে পারবে।
ডক্টরের শরণাপন্ন হওয়া
দেখুন উপরে আপনি যে গুলো ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো হলো প্রাথমিক চিকিৎসা। অর্থাৎ এই চিকিৎসা গুলোর মাধ্যমে কখনোই একজন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কে সুস্থ করা সম্ভব নয়। তবে আপনি যদি আপনার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর পরিস্থিতি অবনতির দিকে লক্ষ্য করেন। তাহলে আপনার উচিত হবে তাৎক্ষণিক ভাবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া। এবং যখন আপনি ডক্টরের শরণাপন্ন হবেন। তখন তারা বলে দিবে যে, সেই রোগীর জন্য কোন কোন ওষুধ খাওয়া উচিত। এবং কিভাবে চলাফেরা করা উচিত।